স্টাফ রিপোর্টার” শেখ জুয়েল রানা
ঢাকা, ০৭ এপ্রিল ২০২০: সরকার শিল্পখাতসহ বিভিন্ন খাতে যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষনা করছে তার সাথে কৃষক-খেতমজুরদের সহায়তার জন্য কৃষি খাতে ন্যুনতম দশ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন জাতীয় কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
জাতীয় কৃষক সমিতির কার্যনির্বাহী সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম গোলাপ এবং বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নীলু ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রাজু আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব দাবী করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে কৃষিখাতের পোল্ট্রি খামার, মৎস্যচাষ, কৃষিশিল্প অন্তর্ভুক্ত থাকলেও কৃষির মূল খাত মধ্য ও প্রান্তিক চাষী-যারা কৃষকের মূল অংশ ও খেতমজুররা একেবারেই বাদ পড়ে গেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সব্জি ও তরিতরকারী উৎপাদনকারীরা তাদের পণ্যের কোন দাম পাচ্ছে না, আর মাঠে যে বোরো ধান রয়েছে তাতে পানি দেয়ার মত খরচ জোগান ও ধানের দামেরও তারা কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। গত বোরো মৌসুমে কৃষক ধানের দাম না পাওয়ার প্রেক্ষিতে আমন ধানের কৃষক যাতে টাকা সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছিল তাও একইভাবে সেরকম কার্য্যকর করা যায়নি। তখন বোরো ধান কাটার সময় খেতমজুরদের উচ্চ মজুরীকে লোকসানের কারণ হিসাবে দেখান হয়েছিল। এবার অন্য কাজ না থাকায় ধান কাটার মজুর মিলবে ঠিকই, কিন্তু তাদের পেটেভাতে সে কাজ করতে বলবে ধারনা। এই কৃষক- খেতমজুর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বর্ধিত অর্থ-দেয়া হচ্ছে। তার সুবিধা পাবেনা। অথচ বিশ্বব্যাপী শিল্প বাণিজ্য আমদানী-রপ্তানী-প্রবাসী কর্মসংস্থান সব ক্ষেত্রে যে সংকট দেখা দেবে, এক কথায় যে বিশ্ব মন্দা শুরু হয়েছে এবং হবে তাতে জাতীয় প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেই কেবল নয়, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকেও নিশ্চিত করতে পারবে।
বিবৃতিতে কৃষক-খেতমজুর নেতৃবৃন্দ এই অবস্থায়-
১। সমগ্র কৃষি খাত, বিশেষ করে কৃষক ও খেতমজুরদের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষনা।
২। ঐ প্রণোদনা ব্যবহার করে বোরো মৌসুমে ধানের মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে কৃষকের উদ্বৃত্ত ধান সবটাই কিনে নেয়া।
৩। গুদাম সংকট মেটাতে অতিরিক্ত গুদাম ভাড়া করা, প্রয়োজনে কৃষকের কাছ থেকে কিনে তার কাছেই মজুত রাখা ও চালকল মালিকদের নির্দিষ্ট লাভে প্রদান করা, যাতে তারা চাল বানিয়ে সরকারী গুদামে দেয়।
৪। কৃষির যান্ত্রিককারণে সরকারের উদ্যোগ নিয়েই সেই যন্ত্রসমূহ কৃষককে সমবায়ী মালিকানায় প্রদান করা।
৫। প্রতি উপজেলায় কৃষিভিত্তিক প্যাডি স্যালো স্থাপন ও সমবায় ভিত্তিতে তা পরিচালনা করা।
৬। শস্যবীমা চালু করা।
৭। খেতমজুরদের নিবন্ধন ও তাদের সারা বছর কাজ ও মজুরী নির্ধারণ করা।

বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়, কৃষিবান্ধব সরকার এ সকল বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে করোনা উত্তর কৃষি খাতে পুণর্বাসনে যথাযথ ব্যবস্থা করবে।
কৃষক-খেতমজুরদের সহায়তা প্রদানের জন্য কৃষিখাতে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবী করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।